কুমিল্লার বেশ কয়েকটি উপজেলা এলাকার সহস্রাধিক তাঁতি পরিবার এ শিল্পের প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে। সুতা ও রংয়ের উচ্চ মূল্যসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বর্তমানে অল্প কিছু তাঁতি কোনো রকমে তাদের পেশা টিকিয়ে রেখেছেন। চান্দিনার আওরাল গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ, হরিচরণ দেবনাথসহ বেশ কয়েক জন জানান, প্রতি কেজি সুতা বিক্রি করা হয় ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকায়। খাদিশিল্পীরা তাদের নিকট থেকে সুতা কিনে খাদি তৈরি করে। তবে বর্তমানে শুধু তুলার সুতা দিয়ে খাদি উত্পাদিত হয় না। খাদি সুতার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থেকে সুতা এনে সেই সুতার মিশ্রণে কারিগররা খাদি তৈরি করছে। ফলে খাদির আদি রূপ বদলে গেছে এবং খাদি কাপড় পড়ে এখন আর আগের মতো আরাম পাওয়া যায় না।
বর্তমানে কুমিল্লা মহানগরীর প্রায় অর্ধশত অভিজাত খাদি দোকানে খাদির বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। ঈদ, নববর্ষ ও পূজা উপলক্ষ্যে খাদির পাঞ্জাবি ও ফতুয়ার বেশ চাহিদাও রয়েছে। সাড়ে ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় খাদির পাঞ্জাবি পাওয়া যায়। ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকায় থ্রি-পিস, ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায় শাড়ি, ৮০ থেকে ২০০ টাকায় প্রতি গজ থান কাপড়, ৬০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায় বেড শিট, কাপড় ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায়, শার্ট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, লুঙ্গি ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় পাওয়া যায়।
কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুর এলাকার খাদি কাপড়ের ব্যবসায়ী প্রদীপ কুমার রাহা জানান, সুতার মূল্যবৃদ্ধির কারণে বর্তমানে খাদি কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের সুবিধার্থে এখনো খাদিসামগ্রী কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন দোকান থেকে যে মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে, তা দেশের অন্য যে কোনো স্থানে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, দামে ও গুণমানে কুমিল্লার খাদির চেয়ে এত কম মূল্যে কোন ব্র্যান্ডের কাপড় পাওয়া যায় না। অথচ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে খাদিশিল্প মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না।